Home / সিনিয়র সচিব

সিনিয়র সচিব

ড. আহমেদ মুনিরুছ সালেহীন

৫ মে ২০২০ সালে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব হিসেবে যোগদান করেন এবং ৩১ শে ডিসেম্বর ২০২২ তারিখে সিনিয়র সচিব হিসেবে পদোন্নতি লাভ করেন। ১৯৯১ সালে বাংলাদেশ সিভিল সাভির্সের নবম ব্যাচের একজন কর্মকর্তা হিসেবে যোগদানের পূর্বে তিনি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালিয়ের ইংরেজি বিভাগের লেকচারার হিসেবে প্রায় দু’বছর অধ্যাপনা করেন। তিনি কাস্টমস ক্যাডারের একজন সদস্য হিসেবে ১৮ বছর অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের আওতায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের মাঠ ও নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেন। ২০০৯ সালে উপসচিব হিসেবে পদোন্নতি পাওয়ার পর  কিছু সময় তিনি  প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের আওতাধীন প্রাইভেটাইজেশন কমিশনে  কাজ করেন। পরে প্রায় পাঁচ বছর অর্থবিভাগে দায়িত্ব পালন করেন উপসচিব, যুগ্মসচিব ও অতিরিক্ত সচিব হিসেবে।

 

ড. সালেহীনের জন্ম ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলার শাঁখচূড়া গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত আলোকিত পরিবারে, ১৯৬৫ সালে। শিক্ষাবিদ পিতা (মরহুম) এ, বি, মুসলেহ উদ্দিন আহমেদ [প্রধান শিক্ষক, গফরগাঁও ইসলামিয়া (সরকারি) উচ্চ বিদ্যালয়; অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ও প্রতিষ্ঠাতা প্রধান শিক্ষক, শাঁখচূড়া উচ্চ বিদ্যালয়] ও বিদূষী মাতা (মরহুম) মোছাঃ হাজেরা খাতুনের  নয় সন্তানের কনিষ্ঠতম  তিনি। তাঁর ভাইবোনেরা সবাই উচ্চশিক্ষিত এবং স্ব স্ব ক্ষেত্রে সামাজিকভাবে প্রতিষ্ঠিত।

 

শিক্ষা ও পেশাগত উভয় ক্ষেত্রে অসাধারণ কৃতিত্বের স্বাক্ষর রেখেছেন তিনি। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগ থেকে অনার্স ও মাস্টার্স উভয় পরীক্ষায় প্রথম শ্রেণিতে প্রথম স্থান অধিকার করেছেন। সিভিল সার্ভিসে প্রবেশের পর হিউবার্ট এইচ হামফ্রে ফেলো হিসেবে গ্র্যাজুয়েট স্টাডি সম্পন্ন করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের দ্য  পেনসিলভানিয়া স্টেট ইউনিভার্সিটিতে এবং এমবিএ করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাণিজ্য অনুষদ থেকে। সর্বশেষ, অস্ট্রেলিয়া সরকারের মর্যাদাপূর্ণ এনডেভার এওয়ার্ডস নিয়ে পাবলিক পলিসিতে পিএইচডি সম্পন্ন করেছেন অস্ট্রেলিয়ার ফ্লিন্ডার্স ইউনিভার্সিটি থেকে। বাংলাদেশের প্রেক্ষিতে ট্যাক্সেশন ও গভর্নেন্স নিয়ে করা তাঁর পিএইচডি অভিসন্দর্ভ উক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘ভাইস চ্যান্সেলর’স এওয়ার্ড ফর ডক্টরাল থিসিস এক্সেলেন্স’ অর্জন করেছে। তাঁর বেশ কিছু গবেষণা প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে বিভিন্ন পিয়ার- রিভিউড আন্তর্জাতিক জার্নালে।

 

তিনি বাংলাদেশ পাবলিক এডমিনিস্ট্রেশন ট্রেনিং সেন্টার (বিপিএটিসি) কর্তৃক পরিচালিত দশম বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ কোর্স এবং ৬৯তম এসিএডি কোর্সে শ্রেষ্ঠ প্রশিক্ষণার্থী হওয়ার গৌরব অর্জন করেন।

 

পাবলিক ফাইনান্স রিফর্ম, পাবলিক প্রকিউরমেন্ট, আন্তর্জাতিক নেগোশিয়েশন ও  কর ব্যবস্থাপনাসহ বিভিন্ন পেশাগত বিষয়ে দেশেবিদেশ প্রশিক্ষিত  ড. সালেহীন  প্রশিক্ষক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করে থাকেন। জনপ্রশাসন, কর ব্যবস্থা ও অভিবাসন বিষয়ে তিনি  প্রশিক্ষণ প্রদান করেছেন বিপিএটিসি, ন্যাশনাল ডিফেন্স কলেজ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইবিএসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে। সাম্প্রতিক সময়ে শ্রমঅভিবাসন ও শ্রম কূটনৈতিক বিষয়ক আলোচনায় নিয়মিত অংশ নিচ্ছেন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে। বাংলাদেশের প্রতিনিধি হিসেবে তিনি ২০১৯ সালের অক্টোবরে দুবাইয়ে অনুষ্ঠিত আবুধাবি ডায়লগে অভিবাসী কর্মীদের ফাইনান্সিয়াল লিটারেসি বিষয়ক সেমিনারে কো-চেয়ার এবং ২০২০ সালের জানুয়ারিতে ইকুয়েডরের কিটোতে অনুষ্ঠিত গ্লোবাল ফোরাম ফর মাইগ্রেশন এন্ড ডেভেলপমেন্ট (জিএফএমডি) কনফারেন্সে Reducing Vulnerabilities: Pathways to Regularization শীর্ষক রাউন্ড টেবিল সেশনে চেয়ার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

 

উচ্চশিক্ষার্থে অবস্থান করা ছাড়াও পেশাগত প্রশিক্ষণ, শিক্ষাসফর এবং দ্বিপাক্ষিক ও বহুপাক্ষিক আলোচনায় অংশগ্রহণের উদ্দেশ্যে ড. সালেহীন এশিয়া, ইউরোপ, উত্তর আমেরিকা, ল্যাটিন আমেরিকা, আফ্রিকা ও অস্ট্রেলিয়া মহাদেশের বিভিন্ন দেশ ভ্রমণ করেছেন।

 

ব্যক্তিগত জীবনে স্ত্রী ডালিয়া পারভীন, পুত্র রাফিদ আহমেদ সালেহীন ও কন্যা জারিন মুনিয়াতকে নিয়ে ড. সালেহীনের সংসার। ছাত্রজীবন থেকেই তিনি প্রগতিশীল চিন্তাধারায় উদ্বুদ্ধ এবং সৃজনশীল ও মননশীল লেখালেখির সাথে যুক্ত। তাঁর প্রকাশিত গ্রন্থসংখ্যা ৭।

 

তিনি বিশ্বাস করেন, জনপ্রশাসনের একজন কর্মীর জন্য সেবামুখী মনোভাব নিয়ে মানুষের জন্য কাজ করাই স্রষ্টা ও দেশের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানানোর শ্রেষ্ঠ উপায়।